মুখে এলার্জি দূর করার ক্রিম এর নাম এবং ব্যবহার বিধি।

আমাদের শরীরে এলার্জি হওয়া যা একটি স্বাভাবিক সমস্যা। শরীরে এলার্জি হয় মূলত বিভিন্ন এলার্জি জনিত খাবার, ধুলো বালি, বিভিন্ন কেমিক্যাল জাতীয় পদার্থ এবং স্বর্নলংকার থেকে। এলার্জি হলে এর প্রতিক্রিয়া হিসেবে সারা শরীরের পাশাপাশি মুখের মধ্যেও চুলকানি হয়ে ফুসকুড়ি পরে যায়। তাই এ ফুসকুড়ি এবং ফুসকুড়ি পরার ফলে হওয়া দাগ দ্রুত নিরাময় করতে চাই। এজন্য আমরা জানতে চাই মুখে এলার্জি দূর করার ক্রিম এর নাম সম্পর্কে।

মুখে এলার্জি দূর করার ক্রিম এর নাম।

মুখে এলার্জি হওয়া যা একটি সাধারন এবং স্বাভাবিক ঘটনা। তবে মুখে এলার্জি হলে আমাদেরকে বেশ সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। মুখে এলার্জি হলে প্রথমে তা চুলকানি হয়ে সেখানে ফুসকুড়ি পরে দাগ পরে যায় যার কারনে আমাদের বেশ সমস্যায় পরতে হয়। এলার্জির ফলে হওয়া মুখের এ দাগ গুলো দ্রুত নিরাময় করতে মুখে এলার্জি দূর করার ক্রিম বেশ কার্যকর হয়ে থাকে। নিচে মুখের এলার্জি নিরাময় করার কয়েকটি কার্যকরী ক্রিম নিয়ে আলোচনা করা হলো।

নিচে মুখ এলার্জি দূর করার কয়েকটি ক্রিমের নাম উল্লেখ করা হলো:

  1. বেট সি এল ( Bet- CL ) ক্রিম
  2. ডারমাসল এন ( Dermasol N ) ক্রিম
  3. ইজেক্স ০.০৫ ( Ezex 0.05 ) ক্রিম
  4. বেটনোভেট এন ( Betnovate N ) ক্রিম
  5. অ্যালিভিও এক্সট্রা ( Alivio Extra ) ক্রিম
  6. টোকোডার্ম প্লাস ( Tocoderm Plus ) ক্রিম
  7. সালোবেট অয়েনমেন্ট ( Salovet Oinment ) ক্রিম
  8. পেভিসোন ( Pevison ) ক্রিম

ক্রিম মুখে এলার্জি হলে উল্লেখিত এ ক্রিম গুলোর যেকোন একটি ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন। এ ক্রিম গুলো মুখে এলার্জি এবং ফুসকুড়ি পরার ফলে হওয়া দাগ দ্রুত নিরাময় করতে বেশ কার্যকরী। তবে মুখে এলার্জির প্রতিক্রিয়া তীব্র হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে এ ক্রিম গুলো ব্যবহার করতে হবে।

মুখে এলার্জি দূর করার ফেসওয়াস ।

সাধারনত মুখে এলার্জি হলে চুলকানি হয়ে ফুসকুড়ি পরার কারনে মুখের সে অংশে কালো দাগ পরে যায়। মুখের এলার্জি এবং ফুসকুড়ি ফলে হওয়া কালো দাগ দূর করতে মুখে এলার্জি দূর করার ক্রিম এর পাশাপাশি মুখে এলার্জি দূর করার ফেসওয়াস বেশ কার্যকরী। এখন আমরা জানবো মুখে এলার্জি দ্রুত দূর করার কয়েকটি কার্যকরী ফেসওয়াস সম্পর্কে।

নিচে কয়েকটি মুখে এলার্জি দূর করার ফেসওয়াসের নাম উল্লেখ করা হলো:

  1. Himalaya Neem – হিমালয়া নিম ফেসওয়াশ
  2. Himalaya Strawberry Face Wash – হিমালয়া স্ট্রবেরি ফেসওয়াস
  3. Himalaya Peach Face Wash – হিমালয়া পিচ ফেসওয়াস
  4. Excellent Neem Face Wash – এক্সিলেন্ট নিম ফেসওয়াস
  5. Excellent Orange Face Wash – এক্সিলেন্ট অরেঞ্জ ফেসওয়াস

এ ফেসওয়াস গুলো সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে তৈরির ফলে কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয় না। মুখে এলার্জি এবং এলার্জি ফলে হওয়া ছোপ ছোপ কালো দাগ দূর করতে এ ফেসওয়াস গুলো অত্যান্ত কার্যকরী।

পড়ুন: বাচ্চাদের এলার্জি ঔষধ এর নাম

তবে মুখে এলার্জির প্রতিক্রিয়া তীব্র হলে এ ফেসওয়াস গুলো ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে হবে। মুখে এলার্জি তীব্র হলে অন্যান্য ঔষধ সেবন করতে হবে। এরপর মুখে এলার্জি প্রতিক্রিয়া হালকা হলে বা কমে গেলে এ ফেসওয়াস গুলো ব্যবহার করতে পারেন।

মুখে এলার্জি কেন হয় ?

মুখের এলার্জি নানা কারনেই হতে পারে হতে পারে। এলার্জি জনিত খাবার বা বা এলার্জি জনিত বস্তুর সংস্পর্শ এলার্জি হয়ে থাকে। শরীরে এলার্জি হলে প্রথম অবস্থায় এর প্রতিক্রিয়া মুখে দেখা যায় না। এলার্জির প্রতিক্রিয়া গুলো প্রাথমিক ভাবে লক্ষণীয় হয় পিঠে,গাড়ে এবং হাতপায়ে। এর পর ধীরে ধীরে মুখে এলার্জির প্রতিক্রিয়া হিসেবে চুলকানি এবং ফুসকুড়ি হয়ে থাকে। মুখে এলার্জি হওয়ার বেশ কিছু কারন রয়েছে তা নিয়ে নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

মুখে এলার্জি হওয়ার কারন গুলো হলো:

এলার্জি জনিত খাবার

মুখে এলার্জি হয়ে থাকে মূলত এলার্জি জনিত খাবার গ্রহনের ফলে। যেমন: গরুর মাংস, হাঁসের মাংস, ইলিশ মাছ, চিংড়ি মাছ, গরুর দুধ, ডিম এবং বাদাম ইত্যাদি খাবার গুলো গ্রহনের ফলে এলার্জি হয়ে থাকে।

ধুলো বালি ও পশু পাখির লোম

ধুলো বালি বা বিভিন্ন পশু পাখির লোমও অনেক সময় মুখে এলার্জি কারন হয়ে থাকে। কেননা ধুলো বালি এবং পশু পাখির লোম খুবই ক্ষুদ্র হওয়ায় সহজেই নিশ্বাসের সাথে আমাদের ভিতরে প্রবেশ করে। যার ফলে শরীরের ইমিউন সিস্টেম এটিকে ক্ষতিকর পদার্থ হিসেবে চিহ্নিত করে। যার প্রতিক্রিয়া হিসেবে আমাদের শরীরে এবং মুখে এলার্জি সৃষ্টি করে থাকে।

কসমেটিকস এবং স্কিন কেয়ার পণ্য

অনেক সময় বিভিন্ন ধরনের কসমেটিকস এবং স্কিন কেয়ার পণ্য থেকে আমাদের শরীরে বা মুখে এলার্জি হয়ে থাকে। তই আপনার শরীরে এলার্জি সৃষ্টি করে এমন কসমেটিকস এবং স্কিন কেয়ার পণ্য গুলোকে চিহ্নিত করতে হবে। এরপর তা পরিধান এবং ব্যবহার থেকে যথা সম্ভব বিরত থাকতে হবে।

কেমিক্যাল জাতীয় পদার্থ

আমাদের শরীর বিভিন্ন কেমিক্যাল জাতীয় পদার্থের সংস্পর্শে এলে সেখান থেকে এলার্জির সৃষ্টি হতে পারে। যেমন: কাপড় কাচার সাবান বা ডিটারজেন্ট এবং অন্যান্য রাসায়নিক পদার্থের সংস্পর্শে আমাদের শরীরের এবং মুখে এলার্জি হয়ে থাকে।

আমাদের যদি উল্লেখিত কোন খাবার বা বস্তুতে এলারজি থেকে থাকে তাহলে এ খাবার বা বস্তু গুলো থেকে যথা সম্ভব বিরত থাকতে হবে। মুখে এলার্জি দূর করার ক্রিম

মুখে এলার্জির লক্ষণ কি ?

এতোক্ষণ আমরা আলোচনা করেছি মুখে এলার্জি দূর করার ক্রিম এর নাম এবং মুখে এলার্জি কেন হয় ইত্যাদি সম্পর্কে। এখন আমরা জানবো মুখে এলার্জির লক্ষণ কোন গুলো সে সম্পর্কে। মুখে এলার্জি হলে তার বেশ কিছু লক্ষণ ফুটে উঠে। সে লক্ষণ গুলো নিয়ে নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

মুখে এলার্জির লক্ষণ গুলো হলো:

  • মুখে চুলকানি হয়ে ফুসকুড়ি পরে যাওয়া।
  • ঠোট, জিভ এবং গাড় ফুলে যেতে পারে।
  • মুখের ভিতরে,ঠোঁটে এবং জিভে অনবরত চুলকানির সৃষ্টি হওয়া।
  • চোখ লাল হয়ে যাওয়া এবং চোখ দিয়ে অনবরত পানি পরতে থাকা।
  • নিশ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া বা শ্বাসকষ্ট হওয়া।
  • নাক দিয়ে পানি পরা এবং সর্দি হওয়া।

যদি কারো মধ্যে উল্লেখিত লক্ষণ গুলোর ২/১ টি প্রকাশ পায় তাহলে বুঝতে হবে তার শরীর এবং মুখ এলার্জি দ্বারা আক্রান্ত হয়েছে।

মুখে এলার্জি দূর করার ঘরোয়া উপায়।

মুখে এলার্জি হলে তা কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি অবলম্বন করে খুব সহজেই ২ – ৩ দিনের মধ্যে নিরাময় করা সম্ভব। কিন্তু এলার্জি হলে আমরা অধিকাংশ সময় বিভিন্ন ঔষধ সেবন করে থাকি। যার ফলে আমাদের শরীরে নানা রকম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।

তাই এলার্জি হলে সর্বপ্রথমে ঘরোয়া উপায়ের মাধ্যমে নিরাময় করার চেষ্টা করতে হবে। নিচে মুখে এলার্জি দূর করার ঘরোয়া উপায় গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

মুখে এলার্জি দূর করার ঘরোয়া উপায় গুলো নিচে উল্লেখ করা হলো:

নিম পাতা

নিম পাতা আমাদের ত্বকের এলার্জির ফলে হওয়া ফুসকুড়ি এবং চুলকানি দূর করতে বেশ কার্যকরী। মুখে নিম পাতা প্রয়োগের আগে তা পেস্ট করে নিতে হবে। এরপর দিনে দু’বেলা ৩ – ৪ দিন প্রয়োগ করতে হবে।

তুলসি পাতা

  • তুলসি পাতা হচ্ছে প্রাকৃতিক এন্টিসেপটিক।
  • তুলসি পাতা এলার্জি চুলকানি নিরাময়ে বেশ কার্যকরী হয়ে থাকে।
  • এক মুঠো পরিমান তুলসি পাতা পেস্ট করে নিতে হবে।
  • এরপর তা মুখে প্রয়োগ করতে হবে প্রয়োগ করার ৩০ মিনিট পরে তা ধুয়ে ফেলতে হবে।
  • এভাবে ৩ থেকে ৪ দিন প্রয়োগ করতে হবে।

অ্যালোভেরার জেল

  • শরীর এলার্জি দ্বারা আক্রান্ত হলে তার প্রতিকার হিসেবে অ্যালোভেরার জেল বেশ কার্যকরী একটি উপাদান।
  • এটি প্রয়োগ করার জন্য প্রথমে অ্যালোভেরার একটি পাতা থেকে জেল বের করে তা পেস্ট করে নিতে হবে।
  • এরপর তা চুলকানি জনিত স্থানে প্রয়োগ করতে হবে।
  • এভাবে দিনে দু’বার করে ২ থেকে ৩ দিন প্রয়োগ করতে হবে।

নারিকেল তেল

  • নারিকেল তেল এলার্জির ফলে হওয়া চুলকানি এবং ফুসকুড়ির জ্বালাপোড়া দূর করে স্বস্তি এনে দেয়।
  • প্রথমে কয়েক চামচ পরিমান নারিকেল তেল হালকা গরম করে নিতে হবে।
  • এরপর তা আক্রান্ত স্থানে প্রয়োগ করতে হবে।
  • এভাবে দিনে ৩ বার করে ৪ – ৫ দিন প্রয়োগ করতে হবে।

অলিভ অয়েল

  • মুখে এলার্জি দূর করতে অলিভ অয়েল বা জলপাইের তেল অত্যান্ত কার্যকরী একটি উপাদান।
  • অলিভ অয়েল ত্বকের ময়েশ্চারাইজার হিসেবে কাজ করে থাকে।
  • এটি প্রয়োগ করার জন্য প্রথমে পরিমান অলিভ অয়েল হালকা কুসুম গরম করে নিতে হবে।
  • এরপর আক্রান্ত স্থানে তা প্রয়োগ করে হবে।
  • এভাবে দিনে তিনবার করে এলার্জি নিরাময় হওয়া পর্যন্ত প্রয়োগ করতে হবে।
  • অলিভ অয়েল ছোট বড় সকলেরই ক্ষেত্রে কার্যকরী একটি ঔষধ।

উল্লেখিত মুখে এলার্জি দূর করার ঘরোয়া উপায় গুলো বেশ কার্যকরী এবং পরীক্ষীত উপায়। এ পদ্ধতি গুলো সঠিক ভাবে প্রয়োগ করে কোনো প্রকার ঔষধ ব্যবহার না করেই মুখের এলার্জি দূর করতে পারেন। মুখে এলার্জি দূর করার ক্রিম

মুখে এলার্জি কতদিন স্থায়ী হয় ?

উপরে আমরা জেনেছি মুখে এলার্জি দূর করার ক্রিম এর নাম সম্পর্কে। এখন আমরা জানবো মুখে এলার্জি হলে তা কতদিন স্থায়ী হয় এ সম্পর্কে। এলার্জির বিভিন্ন প্রতিক্রিয়ায় উপর নির্ভর করে মুখে এবং শরীরে এলার্জি ২ থেকে ৪ সপ্তাহ পর্যন্ত স্থায়ী হয়ে থাকে।

Leave a Comment