ঢোক গিলতে গলা ব্যথার ওষুধ এর নাম এবং দাম।

সাধারণত আমাদের দেশের ঘনঘন ঋতু পরিবর্তনের কারনে আমাদের শরীরের আবহাওয়া ও পরিবেশের সাথে খাপ খাওয়াতে না পেরে ঠান্ডা ও কাশি হয়ে থাকে। ঠান্ডা কাশি হলে এ থেকে ধীরে ধীরে গলায় ব্যথা হতে শুরু করে। একসময় ব্যাথা তীব্র হয়ে যায় যার কারনে ঢোক গিলতে গেলে এবং খাবার খাওয়ার সময় গলায় ব্যথা হয়। গলায় ব্যথা হওয়ার কারনে আমাদের বেশ অস্বস্তিে পরতে হয়। তাই আমরা গলার ব্যথা দ্রুত নিরাময় করতে চাই। এজন্য আমরা জানতে চাই ঢোক গিলতে গলা ব্যথার ওষুধ এর নাম সম্পর্কে।

ঢোক গিলতে গলা ব্যথার ওষুধ এর নাম।

ঠান্ডা বা সর্দি কাশি হলে গলায় ব্যথা হয় মূলত টনসিলের কারনে। আমাদের জিভের পেছনে গোলাকার পিণ্ডের মতো দেখতে যে কোষটি রয়েছে এটিই হলো টনসিল। টনসিল হলো আমাদের শরীরের একটি প্রতিরোধ ব্যবস্থা আর এ টনসিলে কোনো প্রকার সংক্রমণ হলে তার প্রতিক্রিয়া হিসেবে আমাদের ঠান্ডা বা সর্দি কাশি হয়ে থাকে।

সাধারনত টনসিলের মধ্যে সংক্রমনের পরিমান বেড়ে গেলে আমাদের গলায় ব্যথা হয়ে থাকে। গলায় ব্যথা হলে আমাদের ঢোক গিলতে এবং খাবার খেতে বেশ অসুবিধা হয়ে থাকে। তাই এ রোগটি আমরা দ্রুত নিরাময় করতে চাই। এ গলা ব্যথা নিরাময় করতে বেশ কিছু ঢোক গিলতে গলা ব্যথার ওষধ রয়েছে।

নিচে ঢোক গিলতে গলা ব্যথার ওষুধ এর নাম গুলো উল্লেখ করা হলো :

  1. ডক্সিকেপ ১০০ এম জি ( Doxicap 100 mg ) ট্যাবলেট
  2. ডক্সিন ১০০ মি.গ্রা. ( Doxin 100 mg ) ট্যাবলেট
  3. ট্রাইডোসিল ৫০০ এম জি ( Tridosil 500 mg ) ট্যাবলেট
  4. ডক্সিভা ২০০ এম জি ( Doxiva 200 mg ) ট্যাবলেট
  5. নাপা এক্সটেন্ড ৬৫০ মি.গ্রা. ( Napa Extend 650 mg ) ট্যাবলেট
  6. মোক্সাসিল ৫০০ মি.গ্রা ( Moxacil 500 mg ) ট্যাবলেট
  7. রোলাক ১০ মি.গ্রা. ( Rolac 10 mg ) ট্যাবলেট
  8. জিম্যাক্স ৫০০ মি.গ্রা. ( Zimax 500 mg ) ট্যাবলেট
  9. রফিউক্লাভ ৫০০ মি.গ্রা. ( Rofuclav 500 mg ) ট্যাবলেট
  10. টামেন টার্বো ৫০০ মি.গ্রা. ( Tamen Turbo 500 mg ) ট্যাবলেট

উল্লেখিত এ ঔষধ গুলো ঢোক গিলতে গলা ব্যাথা হওয়া নিরাময় করতে বেশ কার্যকরী হয়ে থাকে ।

ঢোক গিলতে গলা ব্যথার ওষুধ এর দাম।

উপরে আমরা জেনেছি ঢোক গিলতে গলা ব্যথার ওষুধ এর নাম সম্পর্কে। এখন আমরা জানবো ঢোক গিলতে গলা ব্যথার ওষুধ এর দাম সম্পর্কে।

  • নিচে উল্লেখিত ঔষধ গুলোর মূল্য তুলে ধরা হলো :

ডক্সিকেপ ১০০ এম জি ( Doxicap 100 mg ) ট্যাবলেট

  • ডক্সিকেপ একটি ট্যাবলেটের মূল্য ২.৫ টকা ।
  • এক পাতার মূল্য ২৫ টাকা।

ডক্সিন ১০০ মি.গ্রা. ( Doxin 100 mg ) ট্যাবলেট

  • ডক্সিন এর একটি ট্যাবলেটের মূল্য ২.২০ টাকা ।
  • এক পাতার মূল্য ২২ টাকা।

ট্রাইডোসিল ৫০০ এম জি ( Tridosil 500 mg ) ট্যাবলেট

  • ট্রাইডোসিল এর একটি ট্যাবলেটের মূল্য ৩৫ টাকা ।
  • এক পাতার মূল্য ১০০ টাকা।

ডক্সিভা ২০০ এম জি ( Doxiva 200 mg ) ট্যাবলেট

  • ডক্সিভা এর একটি ট্যাবলেটের মূল্য ৮ টাকা ।
  • এক পাতার মূল্য ৮০ টাকা।

নাপা এক্সটেন্ড ৬৫০ মি.গ্রা. ( Napa Extend 650 mg ) ট্যাবলেট

  • নাপা এক্সটেন্ড এর এক পাতার মূল্য ২৪ টাকা।

মোক্সাসিল ৫০০ মি.গ্রা ( Moxacil 500 mg ) ট্যাবলেট

  • মোক্সাসিল এর একটি ট্যাবলেটের মূল্য ৭.৫ টাকা ।
  • এক পাতার মূল্য ৭৫ টাকা।

রোলাক ১০ মি.গ্রা. ( Rolac 10 mg ) ট্যাবলেট

  • রোলাক ১০ এর একটি ট্যাবলেটের মূল্য ১২ টাকা ।
  • এক পাতা বা ১৪ টি ট্যাবলেটের মূল্য ১৬৫ টাকা।

জিম্যাক্স ৫০০ মি.গ্রা. ( Zimax 500 mg ) ট্যাবলেট

  • জিম্যাক্স এর একটি ট্যাবলেটের মূল্য ৪০ টাকা ।
  • এক পাতা বা ৬ টি ট্যাবলেটের মূল্য ২৪০ টাকা।

রফিউক্লাভ ৫০০ মি.গ্রা. ( Rofuclav 500 mg ) ট্যাবলেট

  • রফিউক্লাভ এর একটি ট্যাবলেটের মূল্য ৮৫ টাকা ।
  • এক পাতা বা ৭ টি ট্যাবলেটের মূল্য ৫৯৫ টাকা।

টামেন টার্বো ৫০০ মি.গ্রা. ( Tamen Turbo 500 mg ) ট্যাবলেট

  • টামেন টার্বো এর একটি ট্যাবলেটের মূল্য ৩ টাকা
  • এক পাতার মূল্য ৩০ টাকা।

উল্লেখিত এ ঢোক গিলতে গলা ব্যথার ঔষধ গুলো যেকোনো ঔষধের দোকানে পাওয়া যায়। তবে ঔষধ গুলোর মূল্য জায়গা বেধে কিছুটা আলাদা হতে পারে।

ঢোক গিলতে গলা ব্যথার ওষুধ এর ব্যবহার বিধি।

ঢোক গিলতে গলা ব্যথা হলে তা নিরাময় করার জন্য সঠিক নিয়মে ঔষধ সেবন করতে হবে। উল্লেখিত ঔষধ ব্যবহার বিধি নিয়ে নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

ঢোক গিলতে গলা ব্যথার ওষুধ এর ব্যবহার বিধি নিচে উল্লেখ করা হলো :

ডক্সিকেপ ১০০ এম জি ( Doxicap 100 mg )

  • ডক্সিকেপ এ ট্যাবলেটটি দিনে তিন বেলা খাওয়ার পরে সেবন করতে হবে।
  • ১২ বছরের কম বয়সীদের ক্ষেত্রে দিনে দু’বার খাওয়ার পরে সেবন করতে হবে।

ডক্সিন ১০০ মি.গ্রা. ( Doxin 100 mg )

  • ডক্সিন এ ট্যাবলেটটিও দিনে তিনবার সেবন করতে হবে ।
  • বাচ্চাদের ক্ষেত্রে দিনে দু’বার খাওয়ার পরে সেবন করতে হবে ।

ট্রাইডোসিল ৫০০ এম জি ( Tridosil 500 mg ) ট্যাবলেট

  • ট্রাইডোসিল এ ট্যাবলেটটি দিনে একটি ট্যাবলেট খেতে হবে।
  • বাচ্চাদের ক্ষেত্রে সেবন করানোর পূর্বে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

ডক্সিভা ২০০ এম জি ( Doxiva 200 mg )

  • ডক্সিভা ২০০ এটি প্রাপ্ত বয়স্কদের ক্ষেত্রে দিনে দু’বার হবে ।
  • বাচ্চাদের ক্ষেত্রে একবার করে সেবন করতে হবে।

নাপা এক্সটেন্ড ৬৫০ মি.গ্রা. ( Napa Extend 650 mg )

  • নাপা এক্সটেন্ড এ ট্যাবলেটটি দিনে তিনবার সেবন করতে হবে হবে ।
  • বাচ্চাদের ক্ষেত্রে দিনে দু’বার খাওয়ার পরে সেবন করতে হবে।

মোক্সাসিল ৫০০ মি.গ্রা ( Moxacil 500 mg )

  • মোক্সাসিল ৫০০ এ ট্যাবলেটটি প্রাপ্ত বয়স্কদের ক্ষেত্রে দিনে দু’বার হবে ।
  • বাচ্চাদের ক্ষেত্রে একবার খাওয়ার পরে সেবন করতে হবে।

রোলাক ১০ মি.গ্রা. ( Rolac 10 mg )

  • রোলাক ১০ এ ট্যাবলেটটি দিনে দু’বার খাওয়ার পরে সেবন করতে হবে।
  • বাচ্চাদের ক্ষেত্রে সেবন করার পূর্বে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

জিম্যাক্স ৫০০ মি.গ্রা. ( Zimax 500 mg )

  • জিম্যাক্স ৫০০ এ ট্যাবলেটটি মূলত টকটি এন্টিবায়োটিক ঔষধ।
  • এটি প্রাপ্ত বয়স্কদের ক্ষেত্রে দিনে একটি ট্যাবলেট সেবন করতে হবে।

রফিউক্লাভ ৫০০ মি.গ্রা. ( Rofuclav 500 mg )

  • রফিউক্লাভ ৫০০ এ ট্যাবলেটটিও মূলত একটি এন্টিবায়োটিক ঔষধ।
  • এটিও প্রাপ্ত বয়স্কদের ক্ষেত্রে দিনে একটি ট্যাবলেট ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে সেবন করতে হবে।

টামেন টার্বো ৫০০ মি.গ্রা. ( Tamen Turbo 500 mg )

  • টামেন টার্বো ৫০০ এ ট্যাবলেটটি দিনে তিন বেলা সেবন করতে হবে।
  • বাচ্চাদের ক্ষেত্রে দিনে দু’বার সেবন করতে হবে।

উল্লেখিত এ নিয়ম অনুসারে যেকোনো একটি ঔষধ সেবন করলে ঢোক গিলতে গলার ব্যাথা কয়েকদিনের মধ্যে নিরাময় হয়ে যাবে।

ঢোক গিলতে গলা ব্যথা কেন হয় ?

বিভিন্ন কারনেই গলায় ব্যথা হয়ে থাকে। তবে বেশিরভাগ সময় ঠান্ডা বা সর্দি কাশির কারনে গলায় ব্যথা হয়ে থাকে। এছাড়াও বেশ কিছু কারন রয়েছে যার ফলে গলয় ব্যথূ হয়ে থাকে তা নিয়ে নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

  • গলায় ব্যথা হওয়ার প্রধান কারন হচ্ছে টনসিল সংক্রমণ।
  • গলায় টনসিল সংক্রমণ কয়েকদিন স্থায়ী হলে ঢোক গিলতে গলয়া তীব্র ব্যথা হয়ে থাকে।
  • অতিরিক্ত সর্দি কাশি বা ফলু ভাইরাল সংক্রমণের ফলে ঢোক গিলার সময় গলায় তীব্র ব্যথা হয়ে থাকে।
  • গলা বসে যাওয়ায় গলার ভোকাল কর্ডে সংক্রমণ হয়ে যায়।
  • যার ফলে ঢোক গিলতে গলায় ব্যথা হয়ে থাকে।
  • ধুলো বালি বা ফুলের রেনু নাক দিয়ে ভিতরে প্রবেশ করে যার ফলে অ্যালার্জি হয়ে যায়।
  • আর এ অ্যালার্জির ক্ষতিকর প্রতিক্রিয়া হিসেবে ঢোক গিলতে গলায় ব্যথা হয়ে থাকে।
  • অতিরিক্ত গরম আবহাওয়ার সময় গলা শুকিয়ে যায়।
  • তখন পরিমান মতো পানি পান না করলে গলায় ব্যথা হয়ে থাকে।
  • দীর্ঘদিন ধুমপান করার ফলে ধুয়ো গলার বিভিন্ন অংশে সংক্রমণ তৈরি করে।
  • যার ফলে ঢোক গিলতে গলায় ব্যথা হয়ে থাকে।

সাধারণত উল্লেখিত এ কারন গুলোর জন্যই ঢোক গিলার সময় গলায় ব্যথা হয়ে থাকে। তাই গলায় ব্যথা হলে অতিবিলম্বে ঢোক গিলতে গলা ব্যথার ওষুধ সেবন করতে হবে।

ঢোক গিলতে গলা ব্যথার লক্ষণ।

ঢোক গিলার সময় গলা ব্যথা একটি অস্তিত্বদায়ক রোগ। এ রোগটি আমাদের গলায় হলে বেশ কিছু লক্ষণ প্রকাশ পায়।

সে লক্ষণ গুলো নিয়ে নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো :

  • গলার নিচে লালচেভাব বা লাল হয়ে যাওয়া।
  • টনসিল ফোলে যাওয়া এবং গলার নিচে কালো এবং নীল হয়ে যাওয়া।
  • গলার ভেতরের অতিরিক্ত চুলকানি এবং জ্বালাপোড়া হওয়া।
  • গলা ব্যথার কারনে জ্বর হওয়া এবং শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যায়।
  • গলা এবং জিহ্বার গোড়ার দিকে সাদা হয়ে যাওয়া।
  • কারো কারো ক্ষেত্রে অতিরিক্ত কাশি হয়ে থাকে এবং এর ফলে গলার ব্যথা বৃদ্ধি পাওয়া।

সাধারনত গলায় ব্যথা হওয়ার আগে উল্লেখিত এ লক্ষণ গুলো প্রকাশ পেয়ে থাকে। তাই কারো মধ্যে এ লক্ষণ গুলোর ২/১ টি প্কাশ পেলে অতিবিলম্বে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ঢোক গিলতে গলা ব্যথার ওষুধ সেবন করতে হবে।

ঢোক গিলতে গলা ব্যথা দূর করার ঘরোয়া উপায়।

ঢোক গিলতে গলা ব্যথা হলে আমরা প্রথমেই ঢোক গিলতে গলা ব্যথার ওষুধ সেবন করে থাকি। যার ফলে এ ঔষধ গুলো থেকে আমাদের শরীরে বেশ কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়। কিন্তু আমরা অনেকেই জানি না যে ঘরোয়া উপায়ে সহজেই গলা ব্যথা নিরাময় করা যায়।

নিচে ঢোক গিলতে গলা ব্যথা নিরাময়ের কয়েকটি ঘরোয়া উপায় উল্লেখ করা হলো :

  • ঢোক গিলতে গলায় ব্যথা হলে কুসুম গরম পানির সাথে লেবুর রস মিশিয়ে কয়েক ঘন্টা পর পর সেবন করতে পারেন।
  • কুসুম গরম পানির সাথে লবন মিশিয়ে লবন পানি তৈরি করুন এবং তা দিয়ে গার্গল করুন। দিনে ৪ – ৫ বার এটি করুন।
  • ঢোক গিলতে গলায় ব্যথা হলে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করতে হবে।
  • মধু এবং আদার রস মিশিয়ে দিনে ২-৩ বার সেবন করতে হবে।
  • ঢোক গিলতে গলায় ব্যথা নিরাময় করতে এটি বেশ কার্যকরী হয়ে থাকে।
  • আদার চা সেবন করতে পারেন এবং ধুমপান থেকে বিরত থাকতে হবে।

উল্লেখিত এ পদ্ধতিতে ঘরোয়া উপায়ে সহজেই ঢোক গিলতে গলা ব্যথা নিরাময় করা যায়। তবে টনসিল বেশি ফোলে গেলে দ্রুত ডাক্তারের সরনাপন্য হতে হবে।

Leave a Comment