পায়ের আঙ্গুলের ফাঁকে ঘা এর ঔষধ এর নাম।

পায়ের আঙ্গুলে ঘা এই রোগটি কম বেশি সকলেই হয়ে থাকে। পায়ের আঙ্গুলে ঘা এটি মূলত এটি ছত্রাক জনিত রোগ। এটি পায়ের জন্য তেমন ক্ষতিকর কোন রোগ নয়। তবে পায়ের আঙ্গুলের ফাঁকে ঘা হলে আমাদের হাটাচলা করতে বেশ অসুবিধা হয়ে থাকে। তাই আমরা এ রোগটি দ্রুত নিরাময় করতে পায়ের আঙ্গুলের ফাঁকে ঘা এর ঔষধ এর নাম জানতে চাই।

পায়ের আঙ্গুলের ফাঁকে ঘা এর ঔষধ ও ঘরোয়া চিকিৎসা।

পায়ে আঙ্গুলের ফাঁকে ঘা হওয়া এটি খুবই পরিচিত একটি রোগ। যা অনেক সময় ব্যথা, চুলকানি ও অস্বস্তির কারণ হতে পারে। সাধারণত এটি ফাঙ্গাল ইনফেকশন, ঘামের কারণে আর্দ্রতা জমে বা অ্যালার্জি থেকে হয়ে থাকে। পায়ের আঙ্গুলের ফাকে ঘা হলে সময় মতো সঠিক যত্ন এবং চিকিৎসা না করলে এটি আরও বড় সমস্যায় পরিণত হতে পারে। তবে ঘরোয়া প্রতিকার ও কার্যকরী ঔষধ বা মলম ব্যবহারের মাধ্যমে সহজেই এই সমস্যা সমাধান করা সম্ভব।

পায়ের আঙ্গুলের ফাঁকে ঘা কেন হয় ?

পায়ের আঙ্গুলের ফাঁকে ঘা হওয়া এটি অস্বাভাবিক কিছু নয়। এ রোগটি ছোট বড় সকলেরই হয়ে থাকে। এটি পায়ের জন্য তেমন কোন ক্ষতিকর রোগ নয় সঠিক ঔষধ সেবনের মাধ্যমে দ্রুত এ রোগ নিরাময় করা সম্ভব। হাটাচলা করার সময় রাস্তার ধুলো বালি পায়ে লাগে সেখান থেকে পায়ের আঙ্গুলের ফাঁকে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ হয়।

তাছাড়াও পায়ের আঙ্গুলের ফাঁকে ঘা হওয়ার মূল কারণগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো আর্দ্রতা ও ঘামের কারণে ফাঙ্গাসের বৃদ্ধি। এছাড়াও টাইট বা বাতাস চলাচল করতে পারে না এমন সিনথেটিক জুতা ব্যবহার করলে পায়ের আঙ্গুলের ফাঁকে ঘাম জমে এবং সংক্রমণ হয়। আর এ থেকে পায়ের আঙ্গুলের ফাঁকে ধীরে ধীরে ঘা এর সৃষ্টি হয়।

পায়ে আঙুলের ফাঁকে ঘা আমাদের চলাচল করতে বেশ সমস্যা হয় তাই এটি দ্রুত নিরাময় করতে জানতে চাই পায়ের আঙ্গুলের ফাঁকে ঘা এর ঔষধ এর নাম সম্পর্কে।

পায়ের আঙ্গুলের ফাঁকে ঘা এর ঔষধ এর নাম।

পায়ের আঙ্গুলের ফাঁকে ঘা হলে দ্রুত সঠিক ঔষধ ব্যবহার করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ফাঙ্গাল বা ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশনের কারণে ঘা হলে সঠিক মলম ও পাউডার ব্যবহারে দ্রুত ঘা শুকাতে শুরু করে এবং আরাম পাওয়া যায়।

নিচে পায়ের আঙ্গুলের ফাঁকে ঘা এর ঔষধ এর নাম উল্লেখ করা হলো:

  1. ফ্লুক্লক্স ৫০০ ট্যাবলেট
  2. সিপ্রো-এ ৫০০ ট্যাবলেট
  3. পেনটিডস ৪০০ ট্যাবলেট
  4. সেফিক্সিন এ ২০০ মি.গ্রা. ট্যাবলেট
  5. নেবানল পাউডার
  6. নিউসপরিন পাউডার
  7. নেবাজিন পাউডার
  8. নেবাসালফ পাউডার
  9. ফিনট্রিক্স ক্রিম
  10. মাইকোফেম ক্রিম

পায়ের আঙ্গুলের ফাঁকে ঘা হলে তা নিরাময় করার জন্য উপরে উল্লেখিত যেকোনো একটি ট্যাবলেট সেবনের পাশাপাশি উল্লেখিত যেকোনো একটি পাউডার বা ক্রিম ব্যবহার করতে হবে। এভাবে উল্লেখি ঔষধ গুলো সেবন এবং প্রয়োগের মাধ্যমে খুব দ্রুত সময়ে পায়ের আঙ্গুলের ফাঁকের ঘা খুব সহজেই নিরাময় করতে পারবেন।

পায়ের আঙ্গুলের ফাঁকে ঘা এর ঔষধ এর ব্যবহার বিধি এবং মূল্য।

উপরে আমরা জেনেছি পায়ের আঙ্গুলের ফাঁকে ঘা এর ঔষধ এর নাম সম্পর্কে। এখন আমরা জানবো এ ঔষধ গুলোর সঠিক ব্যবহার এবং মূল্য সম্পর্কে।

উল্লেখিত ঔষধ গুলোর ব্যবহার নিচে উল্লেখ করা হলো:

  • ফ্লুক্লক্স ৫০০ ট্যাবলেট: এটি দিনে ২ টি ট্যাবলেট সেবন করতে হবে। বাচ্চাদের ক্ষেত্রে দিনে ১ টি ট্যাবলেট খাবার পরে সেবন করতে হবে। এর এক পাতা ট্যাবলেটের মূল্য ১৪৫ টাকা।
  • সিপ্রো-এ ৫০০ ট্যাবলেট:  সিপ্রো এটিও দিনে দু’বার সেবন করতে হবে। বাচ্চাদের ক্ষেত্রে দিনে একবার খাবার পরে সেবন করতে হবে। সিপ্রো এর এক পাতার মূল্য ৯৫ টাকা।
  • পেনটিডস ৪০০ ট্যাবলেট: পেনটিডস ৪০০ এটি দিনে ৩ টি ট্যাবলেট। বাচ্চাদের ক্ষেত্রে দিনে ১/২ টি ট্যাবলেট সেবন করতে হবে। এর একটি ট্যাবলেটের মূল্য ৪ টাকা।
  • সেফিক্সিন এ ২০০ ট্যাবলেট: সেফিক্সিন এ ২০০ দিনে একটি ট্যাবলেট সেবন করতে হবে। সেফিক্সিন এ ২০০ এর ট্যাবলেটের এক পাতার মূল্য ৩৫০ টাকা।
  • নেবানল পাউডার: নেবানল পাউডারটি দিনে তিন বার ব্যবহার করতে হবে। বাচ্চাদের ক্ষেত্রেও তিন বার ব্যবহার করতে হবে। নেবানলের একটি ১০ গ্রাম পাউডারের মূল্য ২৫ টাকা।
  • নিউসপরিন পাউডার: নিউসপরিন এ পাউডারটি ছোট বড় সকলেরই ক্ষেত্রেই দিনে দু’বার ব্যবহার করতে হবে। নিউসপরিন এর একটি ১০ গ্রাম পাউডারের মূল্য ৬৫ টাকা।
  • নেবাজিন পাউডার: নেবাজিন এ পাউডারটি দিনে তিন বার ব্যবহার করতে হবে। বাচ্চাদের ক্ষেত্রে দিনে দু’বার ব্যবহার করতে হবে। এর ২০ গ্রাম পাউডারের মূল্য ৩৯ টাকা।
  • নেবাসালফ পাউডার: নেবাসালফ এটি ছোট বড় সকলেরই জন্যই দিনে ২-৩ বার ব্যবহার করতে হবে। নেবাসালফ এর একটি ১০ গ্রাম পাউডারের মূল্য ৬৫ টাকা।
  • ফিনট্রিক্স ক্রিম: এই ক্রিমটি দিনে দু’বার সকালে এবং সন্ধায় ক্ষত স্থানে প্রয়োগ করতে হবে। ফিনট্রিক্স এর একটি ১৫ গ্রাম ক্রিমের মূল্য ৯৫ টাকা।
  • মাইকোফেম ক্রিম: এটি দিনে তিনবার প্রয়োগ করতে হবে। বাচ্চাদের ক্ষেত্রে ২ বার প্রয়োগেই যথেষ্ট। এর একটি ১৫ গ্রাম ক্রিমের মূল্য ১০০ টাকা।

উপরে উল্লেখিত নিয়ম অনুযায়ী যেকোনো ১/২ ঔষধ নিয়মিত সেবন এবং প্রয়োগ করলে খুব দ্রুত ঘা শুকাতে শুরু করবে এবং নিরাময় হয়ে যাবে।

পায়ের আঙ্গুলের ফাঁকে ঘা এর ঘরোয়া চিকিৎসা।

পায়ের আঙ্গুলের ফাঁকে ঘা সাধারণত ছত্রাকের আক্রমণের কারনে হয়ে থাকে। পায়ের আঙ্গুলের ফাঁকে ঘা হলে আমরা তা দ্রুত নিরাময় করতে চাই। অনেকেই ঘা হলে তারা পায়ের আঙ্গুলের ফাঁকে ঘা এর ঔষধ গ্রহন করে থাকেন। কিন্তু পায়ের আঙ্গুলের ফাঁকে ঘা হলে তা বেশ কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি ব্যবহার করে খুব সহজেই নিরাময় করা সম্ভব ।

তা নিয়ে নিচে আলোচনা করা হলো:

অ্যালোভেরার জেল

অ্যালোভেরার একটি তাজা পাতা থেকে জেল বের করে তা পেস্ট করে পায়ের আঙ্গুলের ফাঁকে ঘা এর উপর লাগিয়ে দিন এবং শুকিয়ে গেলে তা ধুয়ে ফেলুন। এভাবে দিনে ২ – ৩ বার এবং এক সপ্তাহ এ পদ্ধতি ব্যবহার করতে হবে।

লবন পানি

এক মগ পরিমান গরম পানিতে কিছুটা পরিমান মতো লবন মিশিয়ে লবন পানি তৈরি করতে হবে। এ লবন পানি কোন একটি বড় পাত্রে রেখে তার মধ্যে ১৫ – ২০ মিনিট পা ভিজিয়ে রাখতে হবে। ২০ মিনিট হয়ে গেলে পাত্র থেকে পা উঠিয়ে তা শুকিয়ে নিন। এভাবে দিনে দু’বার এবং ৪/৫ দিন এ পদ্ধতি ব্যবহার করতে হবে।

চা গাছের তেল

পায়ের আঙ্গুলের ফাঁকের ঘা শুকাতে চা গাছের তেল বেশ দারুণ ভাবে কার্যকরী একটি ঔষধ হিসেবে কাজ করে। ক্ষত স্থানের সরাসরি চা গাছের তেল লাগিয়ে দিতে হবে। এভাবে দিনে ২ থেকে ৩ বার প্রয়োগ করতে হবে।

মধু

পায়ের আঙ্গুলের ক্ষত স্থান মধু শুকাতে মধু অত্যান্ত কার্যকরী। পায়ের আঙ্গুলের ফাঁকে ঘা এর মূধ্যে মধু লাগিয়ে দিন এবং শুকিয়ে গেলে তা ধুয়ে ফেলুন। এভাবে দিনে দু’বার করে ৪-৫ দিন প্রয়োগ করতে হবে।

তুলসি পাতা

আমরা সকলেই জানি যে তুলসি পাতা বিভিন্ন রোগের জন্য অত্যান্ত কার্যকরী একটি প্রতিনাশক। ঘা এর মধ্যে প্রয়োগের আগে তুলসি পাতার পেস্ট করে নিতে হবে এবং ক্ষত স্থানে তা প্রয়োগ করতে হবে। এভাবে দিনে দু’বার করে এক সপ্তাহ প্রয়োগ করতে হবে।

উপরে উল্লেখিত পদ্ধতি গুলো নিয়ম অনুযায়ী ব্যবহার করে ঘরোয়া উপায়ে দ্রুত পায়ের আঙ্গুলের ফাঁকে ঘা নিরাময় করা সম্ভব। তবে ঘা এর অবস্থা গুরুতর হলে অবশ্যই ডাক্তারের সরণাপন্য হতে হবে।

পায়ের আঙ্গুলের ফাঁকে ঘা এর হোমিও চিকিৎসা।

অনেক সময় দেখা যায় যে আমাদের পায়ের আঙ্গুলের ফাঁকে ঘা খুব মারাত্মক আকার ধারণ করে। যা নানা রকমের ঔষধ সেবনের পরেও নিরাময় হয় না। তখন মূলত অনেকেই এ হোমিওপ্যাথি ঔষধ প্রয়োগ করে থাকেন। পায়ের আঙ্গুলের ফাঁকে ঘা শুকানোর জন্য বেশ কিছু হোমিওপ্যাথি ঔষধ রয়েছে। সে ঔষধ গুলো নিয়ে নিয়ে নিচে আলোচনা করা হলো।

আঙ্গুলের ফাঁকের ঘা শুকানোর হোমিওপ্যাথি ঔষধ গুলো হলো:

  1. এসিড নাইটিক ২০০ ( Acid Nitic 200 )
  2. নেট্রাম সালফিউরিকাম ( Natrum Sulphuricum )

সাধারণত পায়ের আঙ্গুলের ফাঁকে ঘা শুকাতে হোমিওপ্যাথি ডাক্তাররা এ দুটি ঔষধ সবচেয়ে বেশি দিয়ে থাকেন। এই দুটি হোমিওপ্যাথি ঔষধ অন্যান্য ঔষধের তুলনায় পায়ের আঙ্গুলের ফাঁকে ঘা বা ক্ষত নিরাময় করতে সবচেয়ে বেশি কার্যকরী। পায়ের আঙ্গুলের ফাঁকে ঘা এর ঔষধ ।

পড়ুন: পায়ের ঘা সারানোর মলম এর নাম 

পায়ের আঙ্গুলে ছত্রাক কেন হয় ?

উপরে আমরা আলোচনা করেছি । এর নাম, দাম এবং ব্যবহার সম্পর্কে। এখন আমরা জানবো পায়ের আঙ্গুলে ছত্রাক কেন হয়। বিভিন্ন কারনেই পায়ের আঙ্গুলে ছত্রাক জনিত সমস্যা হতে পারে তা নিয়ে নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

পায়ের আঙ্গুলে ছত্রাক হওয়ার কারন গুলো হলো:

  • গরমকালে আর্দ্র স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়ায় পায়ের আঙ্গুলের ফাঁকে ছত্রাক বেশি হয়ে থাকে।
  • একই মোজা প্রতিদিন এবং বার বার ব্যবহার করার কারনে পায়ে ছত্রাক হয়ে থাকে।
  • পা সবসময় ভেজা থাকার ফলে পায়ের আঙ্গুলের ফাঁকে ছত্রাক হয়ে থাকে।
  • পায়ে দিনের বেশিরভাগ সময় মোজা সহ জুতা পরে থাকার কারনে পা ঘেমে সারাক্ষণ ভেজা থাকে সেখান থেকে পায়ে ছত্রাক হয়ে যায়।
  • কাঁদার মধ্যে খালি পায়ে হাটলে পায়ের আঙ্গুলের ফাঁকে ছত্রাক হয়ে থাকে।

সাধারণত উল্লেখিত এ কারন গুলোর জন্যই পায়ের আঙ্গুলের ফাঁকে ছত্রাক হয়ে থাকে।

পায়ের আঙ্গুলের ছত্রাক প্রতিরোধ করার উপায়।

পায়ের আঙ্গুল থেকে ছত্রাক দূর করার বেশ কিছু উপায় রয়েছে। সে উপায় গুলো নিয়ে নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

পায়ের আঙ্গুল থেকে ছত্রাক প্রতিরোধ করার উপায় নিচে উল্লেখ করা হলো:

  • এক মোজা বার বার পরিধান করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
  • পা বেশিক্ষণ ভেজানো থেকে বিরত থাকতে হবে।
  • পা ধুয়ার পরে কাপড় দিয়ে তা ভালো করে মুছতে হবে বিশেষ করে পায়ের আঙ্গুলের ফাঁকা স্থান মুছতে হবে।
  • খালি পায়ে হাঁটা থেকে বিরত থাকতে হবে।
  • সবসময় সহজেই বাতাস চলাচল করতে পারে এমন জুতা ব্যবহার করতে হবে।
  • পায়ের আঙ্গুলের ফাঁকে ঘা হলে তা চুলকানো থেকে বিরত থাকতে হবে।

উল্লেখি এ উপায় গুলো অবলম্বন করলে সহজেই পায়ে ছত্রাক হওয়া প্রতিরোধ করা সম্ভব। পায়ের আঙ্গুলের ফাঁকে ঘা এর ঔষধ ।

FAQ

পায়ের আঙ্গুলের ফাঁকের ঘা কতদিনে সারে ?

উত্তরঃ পায়ের আঙ্গুলের ফাঁকের ঘা সাধারণত ১০-১৪ দিনের মধ্যে সেরে যায়।

পায়ের আঙ্গুলের ফাঁকে ঘা কেন হয় ?

উত্তরঃ পায়ের আঙ্গুলের ফাঁকে ঘা হওয়ার প্রধান কারণ হলো ফাঙ্গাল বা ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন।

পায়ের আঙ্গুলের ফাঁকে ঘায়ের সবচেয়ে ভালো ঔষধ ?

উত্তরঃ পায়ের আঙ্গুলের ফাঁকে ঘার সবচেয়ে কার্যকরী ঔষধ হলো নেবানল পাউডার।

পায়ের আঙ্গুলের ফাঁকে ঘা হলে কখন ডাক্তারের কাছে যেতে হবে ?

উত্তরঃ পায়ের আঙ্গুলের ফাঁকে ঘা হলে ঔষধ সেবনের ১২-১৫ দিনের মধ্যে না সারলে ডাক্তারের কাছে যেতে হবে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top