দৈনন্দিন জীবনে কাজকর্ম করতে গেলে বিভিন্ন ভাবেই হাত পা এবং শরীরের বিভিন্ন অংশে কেটে যায়। যা আমাদের কম বেশি সকলেরই নিত্যদিনের সমস্যা। কাটা ছেড়া একটি সাধারণ সমস্যা হলেও এর জন্য আমাদের বেশ ভোগান্তিতে পরতে হয়। তাই আমরা কাটা জায়গা দ্রুত নিরাময় করতে চাই। এজন্য আমরা অনেকেই জানতে চাই কাটা জায়গা তাড়াতাড়ি শুকানোর উপায় গুলো সম্পর্কে।
কাটা জায়গা তাড়াতাড়ি শুকানোর উপায় ও করণীয়।
ক্ষত বা কাটা জায়গা সাধারণত তেমন গুরুতর না হলেও যদি এর সঠিক যত্ন না নেওয়া হয়, তবে তা শুকাতে দীর্ঘ সময় লাগতে পারে এবং সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়তে পারে। তাই কাটা জায়গা দ্রুত শুকানোর জন্য কিছু নির্দিষ্ট উপায় জানা এবং অবলম্বন করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নিচে কাটা জায়গা তারাতাড়ি শুকানোর কিছু সহজ এবং প্রাকৃতিক উপায় তুলে ধরা হয়েছে যা কাটা বা ক্ষত স্থানকে তাড়াতাড়ি শুকাতে সাহায্য করবে।
কাটা জায়গা দ্রুত শুকানোর প্রাথমিক পদক্ষেপ।
তাড়াতাড়ি কাটা জায়গা শুকানোর উপায় নিশ্চিত করতে কিছু প্রাথমিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমেই কাটা বা ক্ষত স্থানটি পরিষ্কার করতে হবে। এটি জীবাণু এবং ময়লা থেকে মুক্ত রাখতে সহায়তা করে এবং শুকানোর প্রক্রিয়াকে দ্রুত করে। পানি বা স্যাবলন দিয়ে ভালোভাবে কাটা স্থানটি পরিষ্কার করুন।
এরপর ক্ষতস্থানে অ্যান্টিসেপ্টিক মলম বা পাউডার ব্যবহার করুন যা সংক্রমণ থেকে রক্ষা করবে এবং দ্রুত শুকানোর জন্য সহায়ক হবে। কাটা জায়গা শুকনো রাখাও জরুরি, কারণ অতিরিক্ত আর্দ্রতা শুকানোর প্রক্রিয়া ধীর করতে পারে। তাই ক্ষতস্থানটি শুকনো রাখুন এবং প্রয়োজন হলে ব্যান্ডেজ ব্যবহার করুন।
পড়ুন: জিহ্বায় ঘা এর ঔষধ এর নাম ও ঘরোয়া চিকিৎসা।
তবে ব্যান্ডেজটি নিয়মিত পরিবর্তন করতে ভুলবেন না। এছাড়াও পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ কারণ শরীরের আরাম দ্রুত সেল টিস্যু পুনর্গঠন করতে সাহায্য করে। এই প্রাথমিক পদক্ষেপগুলো অনুসরণ করলে কাটা জায়গা দ্রুত শুকানোর প্রক্রিয়া তারাতাড়ি হবে।
কাটা জায়গা তাড়াতাড়ি শুকানোর উপায়
শরীরের কোথাও কেটে গেলে আমাদের নানা রকম সমস্যায় পরতে হয়। দৈনন্দিন কাজ কর্ম থেকে শুরু করে খাবার গ্রহন পর্যন্ত আমাদের বেশ সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। তাই আমরা কাটা ছেড়া হলে কাটা জায়গা তাড়াতাড়ি শুকানোর উপায় গুলো সম্পর্কে জানতে চাই।
নিচে কাটা জায়গা তাড়াতাড়ি শুকানোর উপায় গুলো উল্লেখ করা হলো:
- কোথাও কেটে গেলে প্রথমত পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে যা সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করে।
- সম্ভব হলে এন্টিসেপ্টিক দিয়ে কাটা জায়গা ধুয়ে নিন যা ব্যাকটেরিয়ার হাত থেকে রক্ষা করে।
- এরপর কাটা ঘা শুকানোর মলম প্রয়োগ করুন যা কাটা স্থান দ্রুত শুকাতে সাহায্য করে।
- কাটা স্থানকে ময়লা, সংক্রমণ এবং পুনরায় আঘাত থেকে রক্ষা করতে ব্যান্ডেজ করে দিন।
- কাটা স্থানের ক্ষত গভীর হলে প্রথমে ড্রেসিং করে নিতে হবে এরপর ব্যান্ডেজ করে দিতে হবে।
- কাটা স্থান ব্যান্ডেজ করার পর কাটা ঘা শুকানোর ঔষধ এবং এন্টিবায়োটিক ট্যাবলেট সেবন করুন।
- কাটা স্থানের ক্ষত গভীর হলে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধ সেবন করতে হবে।
- প্রতি ২৪ ঘন্টা পর পর ব্যান্ডেজ পরিবর্তন করুন এবং কিছুক্ষণ ব্যান্ডেজ খুলে রাখুন যাথে কাটা স্থানে বাতাস লাগে।
- কাটা স্থান কিছুটা শুকালে ব্যান্ডেজ খুলে ফেলুন এতে কাটা স্থানে আলো বাতাস লাগবে এবং কাটা স্থান দ্রুত শুকাবে।
- পুষ্টিকর খাবার গ্রহন করতে হবে বিশেষ করে ভিটামিন সি এবং প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার গ্রহন করতে হবে।
- প্রচুর পরিমানে পানি পান করতে হবে যা কাটা স্থান শুকাতে বেশ সাহায্য করে।
কাটা স্থান দ্রুত শুকাতে উল্লেখিত উপায় গুলো বেশ কার্যকরী। তাই শরীরের কোথাও কেটে গেলে উল্লেখিত পদ্ধতিতে আপনার কাটা জায়গা বা কাটা স্থানের চিকিৎসা করতে পারেন।
কাটা জায়গা তাড়াতাড়ি শুকানোর প্রাকৃতিক উপায়।
উপরে আমরা জেনেছি কাটা জায়গা তারাতাড়ি শুকানোর উপায় সম্পর্কে এখন জানবো কাটা জায়গা শুকানোর প্রাকৃতিক উপায় গুলো সম্পর্কে। কাটা জায়গা শুকাতে ঘরোয়া বা প্রাকৃতিক উপায় গুলো অনেক কার্যকর এবং নিরাপদ। প্রাকৃতিক উপায়গুলি ত্বকের সুরক্ষা নিশ্চিত করার পাশাপাশি দ্রুত সুস্থ হতে সাহায্য করে।
নিচে কাটা জায়গা তারাতাড়ি শুকানোর কয়েকটি ঘরোয়া উপায় উল্লেখ করা হলো:
মধু
মধু হলো প্রাকৃতিক অ্যান্টিসেপ্টিক এবং অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল গুণাগুণে ভরপুর। এটি কাটা জায়গায় বিভিন্ন সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে এবং ক্ষত দ্রুত শুকাতে সাহায্য করে। এটি করতে ক্ষতস্থান পরিষ্কার করে কয়েক ফোটা মধু লাগিয়ে ২০-৩০ মিনিট রেখে দিন তারপর ধুয়ে ফেলুন।
অ্যালোভেরা জেল
অ্যালোভেরার পাতার জেল ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। কাটা জায়গায় অ্যালোভেরা জেল লাগালে কাটা বা ক্ষত স্থান আর্দ্র থাকে এবং ক্ষত স্থান দ্রুত শুকাতে শুরু করে।
লবন পানি
লবন পানি ক্ষতস্থান পরিষ্কার করতে ব্যবহার করা হয় এবং এটি জীবাণু ধ্বংস করতে অত্যন্ত কার্যকরী। এটি করতে এক গ্লাস পরিমান পানিতে পরিমাণ মতো লবন দিয়ে কুসুম গরম করে নিন। এরপর সে পানি দিয়ে কাঁটা স্থান পরিষ্কার করুন।
নারিকেল তেল
নারিকেল তেল প্রাকৃতিক অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল গুণে ভরপুর। এটি ক্ষত স্থানকে মসৃণ রাখে এবং শুকানোর সময় ত্বককে আর্দ্র রাখে। কাটা জায়গায় নারিকেল তেল লাগালে কাটা জায়গা দ্রুত শুকাতে শুরু করে।
চা গাছের তেল
চা গাছের তেল একটি প্রাকৃতিক অ্যান্টিসেপ্টিক যা ক্ষতস্থান পরিষ্কার করে এবং দ্রুত শুকানোর জন্য সহায়তা করে। এটি ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধী এবং সংক্রমণ কমাতে অত্যন্ত কার্যকর।
উল্লেখিত এই প্রাকৃতিক বা ঘরোয়া উপায় গুলো সঠিক নিয়মে কাটা জায়গায় প্রয়োগ করলে ক্ষত স্থানরি দ্রুত শুকাতে শুরু করতে। তবে কাটা স্থানের ক্ষত গভীর হলে এন্টিবায়োটিক ঔষধ গ্রহন করতে হবে।
কাটা জায়গা তাড়াতাড়ি শুকানোর ঔষধ।
এতোক্ষণ আমরা জেনেছি কাটা জায়গা তাড়াতাড়ি শুকানোর উপায় সম্পর্কে। এখন আমরা জানবো কাটা জায়গা তাড়াতাড়ি শুকানোর ঔষধ সম্পর্কে।
নিচে কাটা জায়গা তাড়াতাড়ি শুকানোর ঔষধ গুলোর নাম উল্লেখ করা হলো:
- Fluclox 500 ( ফ্লুক্লক্স ৫০০ ) ট্যাবলেট
- Cipro A 500 ( সিপ্রো এ ৫০০ ) ট্যাবলেট
- Pentids 400 ( পেনটিডস ৪০০ ) ট্যাবলেট
- Sergel 40 ( সারজেল ৪০ ) ট্যাবলেট
- Phylopen DS ( ফাইলোপেন ডিএস ) ট্যাবলেট
- Viodin ( বায়োডিন ) মলম
- Nebanol ( নেবানল ) মলম
- Neosporin ( নিউসপরিন ) পাউডার
- Nebanol ( নেবানল ) পাউডার
- Nebazine ( নেবাজিন ) পাউডার
উল্লেখিত ঔষধ গুলো কাটা জায়গা শুকাতে বেশ দ্রুত কার্যকরী হয়ে থাকে।
কাটা জায়গা শুকানোর মলম এর নাম।
কাটা জায়গা তাড়াতাড়ি শুকানোর উপায় গুলোর মধ্যে মলম প্রয়োগ অত্যান্ত কার্যকরী একটি উপায়। কাটা স্থানে মলম প্রয়োগ করলে তা দ্রুত শুকাতে শুরু করে। তাই এখন আমরা জানবো কাটা জায়গা তাড়াতাড়ি শুকানোর মলম সম্পর্কে।
নিচে কাটা জায়গা শুকানোর মলম এর নাম গুলো উল্লেখ করা হলো:
- Povisep ( পভিসেপ ) মলম
- Bactrocin ( বেক্ট্রোসিন ) মলম
- Betadine Oinment ( বিটাডিন ) মলম
- Mupi Ointment ( মোপি অয়েন্টমেন্ট ) মলম
- Trego ( ট্রেগো ) মলম
- Viodin ( বায়োডিন ) মলম
- Nebanol ( নেবানল ) মলম
উল্লেখিত ঔষধ মলম গুলো কাটা ছেড়া দ্রুত শুকাতে অত্যান্ত কার্যকরী।
কাটা জায়গা শুকানোর খাবার।
উপরে আমরা জেনেছি কাটা জায়গা তাড়াতাড়ি শুকানোর উপায় এবং ঔষধ সম্পর্কে বিস্তারিত। এখন আমরা জানবো কাটা জায়গা শুকানোর খাবার সম্পর্কে। শরীরে কোথাও কেটে গেলে তা শুকাতে ঔষধের পাশাপাশি বেশ কিছু খাবার রয়েছে যা পরিমাণ মতো গ্রহন করলে খুব দ্রুত কাটা জায়গা শুকাতে শুরু করে।
কাটা জায়গা শুকাতে আমাদের বেশি বেশি ভিটামিন সি এবং প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার গ্রহন করতে হবে। এ খাবার গুলো দ্রুত কাটা স্থান শুকাতে সাহায্য করে থাকে। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক কাটা জায়গা শুকানোর খাবার গুলো সম্পর্কে।
নিচে কাটা জায়গা শুকানোর খাবার গুলোর নাম উল্লেখ করা হলো:
- সেদ্ধ ডিম
- দুধ
- সামুদ্রিক মাছ
- লেবু
- কমলা
- বেরি
- পেয়ারা
- বাাম
- মুরগির মাংস
- গরুর কলিজা
- মিষ্টি আলু
- পনির
- গাজর
- পালংশাক
- পাতা কপি ইত্যাদি।
কাটা জায়গা শুকাতে উল্লেখিত খাবার গুলোর মধ্যে যেকোনো ৩/৪ টি খাবার পরিমাণ মতো গ্রহন করলে ক্ষত স্থানটি দ্রুত শুকাতে শুরু করবে।
কাটা জায়গা ড্রেসিং করার নিয়ম ।
ক্ষত গভীর হলে তাতে যেনো কোনো প্রকার ইনফেকশন এবং জীবানুর সংক্রমণ যাতে না ছড়ায় এজন্য মূলত ড্রেসিং করা হয়ে থাকে। কাটা জায়গা ড্রেসিং Blvd প্রথমত কিছু প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র প্রয়োজন হয়।
যেমন:
- জীবাণুমুক্ত ব্যান্ডেজ বা গজ।
- জীবাণু নাশক পদার্থ যেমন বিটাডিন বা ডেটল।
- স্যালাইন যুক্ত পানি বা উষ্ণ ফুটানো হালকা গরম পানি।
- পেইন কিলার জাতীয় ঔষধ।
- জীবাণুমুক্ত হ্যান্ড গ্লাভস।
- প্লাস্টার বা টেপ জাতীয় জিনিস ইত্যাদি।
এ জিনিসপত্র গুলো কাটা জায়গা ড্রেসিং করতে অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ।
কাটা জায়গা ড্রেসিং করার নিয়ম গুলো নিয়ে উল্লেখ করা হলো:
- প্রথমে হ্যান্ড ওয়াশ দিয়ে দুহাত ভালো ভাবে ধুয়ে নিতে হবে।
- এরপর হাতে হ্যান্ড গ্লাভস পরে নিতে হবে।
- পরিষ্কার উষ্ণ হালকা গরম পানি দিয়ে কাটা স্থান ধুয়ে নিতে হবে।
- এরপর পরিষ্কার তুলা দিয়ে কাটা জায়গা মুছতে হবে এবং শুকাতে হবে।
- এখন যেকোনো এন্টিবায়োটিক বা ডাক্তার দ্বারা নির্দেশিত এন্টিবায়োটিক মলম কাটা স্থানে লাগিয়ে নিন।
- এরপর কাটা অংশটুকু পরিষ্কার জীবাণুমুক্ত গজ বা ব্যান্ডেজ দিয়ে পেচিয়ে ডেকে দিন।
- ব্যান্ডেজ সঠিক জায়গায় আটকে রাখার জন্য টেপ বা প্লাস্টার ব্যবহার করুন।
- পরবর্তীতে ব্যান্ডেজ ভিজে গেলে বা অপরিষ্কার হলে ব্যান্ডেজ পরিবর্তন করতে হবে।
- এরপর কাটা স্থান নিরাপদ পরিমাণ শুকিয়ে গেলে ব্যান্ডেজ খুলে ফেলুন।
উল্লেখিত পদ্ধতি অবলম্বন করে নিজেই নিজের কাটা জায়গা সহজেই ড্রেসিং করে নিতে পারেন। কাটা স্থান ড্রেসিং করা, কাটা জায়গা তাড়াতাড়ি শুকানোর উপায় গুলোর মধ্যে অন্যতম কার্যকরী একটি পদ্ধতি।
কাটা জায়গা ড্রেসিং করার ঔষধ।
উপরে আমরা জেনেছি কাটা জায়গা তাড়াতাড়ি শুকানোর উপায় এবং কাটা জায়গা ড্রেসিং করার নিয়ম সম্পর্কে। এখন আমরা জানবো কাটা জায়গা ড্রেসিং করার ঔষধ গুলো সম্পর্কে। কাটা জায়গা ড্রেসিং করার জন্য আমাদের বেশ কিছু ঔষধ প্রয়োজন হয় এবং ড্রেসিং করার পর কাটা জায়গা দ্রুত শুকাতে বেশ কিছু ঔষধ সেবন করতে হয়। সে ঔষধ গুলো সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হলো।
কাটা জায়গা ড্রেসিং করার ঔষধ গুলো নিচে উল্লেখ করা হলো:
- হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড ( Hydrogen Peroxide )
- বায়োডিন ১০% ( Viodin 10% )
- ইউজল ( Eusol )
- নরমাল সেলাইন ( Normal Saline )
- হেক্সিসল ( Hexisol )
- বিটাডিন ( Betadine )
- ডেটল ( Detol )
উল্লেখিত ঔষধ গুলো কাটা জায়গা ড্রেসিং করার সময় ব্যবহার করতে হয়। এখন আমরা জানবো ড্রেসিং করার পরে কাটা স্থান দ্রুত শুকাতে কোন কোন ঔষধ গুলো সেবন করতে হবে।
ড্রেসিং করার পর কাটা জায়গা দ্রুত শুকানোর ঔষধ গুলো হলো:
- Flucloxacillin Sodium BP – সিরাপ
- Phylopen DS – ট্যাবলেট
- Fluclox 500 – ট্যাবলেট
- Cipro-A 500 – ট্যাবলেট
- Pentids 400 – ট্যাবলেট
উল্লেখিত ঔষধ গুলো মূলত কাটা জায়গা শুকানোর এন্টিবায়োটিক ঔষধ। ড্রেসিং করার পর এ ঔষধ গুলোর যেকোনো একটি নিয়মমাফিক সেবন করলে কাটা স্থান দ্রুত শুকাতে শুরু করবে।
কাটা জায়গায় ইনফেকশনের লক্ষণ।
এতোক্ষণ আমরা জেনেছি কাটা জায়গা তাড়াতাড়ি শুকানোর উপায় এবং কাটা জায়গা ড্রেসিং করার ঔষধ সম্পর্কে। এখন আমরা জানবো কাটা জায়গায় ইনফেকশনের লক্ষণ গুলো সম্পর্কে।
কাটা জায়গায় ইনফেকশনের লক্ষণ গুলো নিচে উল্লেখ করা হলো:
- কাটা জায়গায় ইনফেকশন হলে কাটা জায়গা সহ কাটা স্থানের চারপাশে লাল হয়ে যাওয়া।
- ধীরে ধীরে লালচে ভাব বাড়তে থাকা।
- কাটা জায়গার চারপাশে অতিরিক্ত ফুলে যাওয়া।
- কাটা জায়গায় ব্যথা করা এবং সময়ের সাথে ব্যথার তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়া।
- ইনফেকশন হলে কাটা জায়গা থেকে পুঁজ বের হওয়া।
- কাটা জায়গার চারপাশে তাপমাত্রা বৃদ্ধি হওয়া।
- কাটা জায়গায় ইনফেকশন লম্বা সময় থাকলে বা ইনফেকশন তীব্র হলে জ্বর হওয়া।
- ইনফেকশন হলে কাটা জায়গায় অতিরিক্ত চুলকানি হওয়া ইত্যাদি।
উপরে উল্লেখিত এ লক্ষণ গুলোর যেকোনো একটি প্রকাশ পেলে বুঝতে হবে কাটা জায়গায় ইনফেকশন হয়েছে।
কাটা জায়গায় ইনফেকশন হলে করণীয়।
কাটা জায়গায় ইনফেকশন হলে এবং তা লম্বা সময় থাকলে সে জায়গায় পচন ধরাসহ গুরুতর রোগ হতে পারে। তাই কাটা স্থানকে ইনফেকশন হওয়া থেকে রক্ষা করতে হবে।
যদি কোনো ভাবে ইনফেকশন হয়ে যায় বা উল্লেখিত লক্ষণ গুলোর যেকোনো একটি প্রকাশ পায় তাহলে দ্রুত চিকিৎসা গ্রহন করতে হবে। চলুন জেনে নেওয়া যাক কাটা জায়গায় ইনফেকশন হলে করনীয় গুলো সম্পর্কে।
কাটা জায়গায় ইনফেকশন হলে করনীয় গুলো নিচে উল্লেখ করা হলে:
- কাটা জায়গায় ইনফেকশন হলে প্রথমে তা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে।
- এরপর কাটা জায়গা পরিষ্কার করার জন্য এন্টিসেপটিক ক্রিম ব্যবহার করতে হবে।
- কাটা জায়গায় ইনফেকশন হলে তা পুনরায় ড্রেসিং করে ব্যান্ডেজ করে দিতে হবে।
- এরপর কাটা জায়গা শুকানোর এন্টিবায়োটিক ঔষধ সেবন করতে হবে বা ডাক্তারের পরামর্শে ঔষধ সেবন করতে হবে।
- কাটা জায়গায় ইনফেকশন হয়ে ফুলে গেলে এব পুঁজ বের হলে তাৎক্ষণিক ডাক্তারের সরনাপন্য হতে হবে।
- কাটা জায়গা সবসময় শুষ্ক বা শুকনো রাখতে হবে এবং সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করতে হবে।
উল্লেখিত এ উপায় গুলো অবলম্বন করে সহজেই ক্ষতিকর ইনফেকশনের কবল থেকে কাটা জায়গাটি রক্ষা করতে হবে। কাটা জায়গা দ্রুত শুকানোর উপায়। কাটা জায়গা তাড়াতাড়ি শুকানোর উপায় ।
FAQ
কাটা জায়গা কি খেলে তাড়াতাড়ি শুকায় ?
উত্তর: কাটা জায়গা দ্রুত শুকাতে ভিটামিন C (লেবু, কমলা), ভিটামিন E (বাদাম, সয়াবিন তেল), প্রোটিন (মাছ, ডাল) এবং জিঙ্ক (কুমড়া, মাংস) এ জাতীয় খাবার খেতে হবে।
ক্ষত শুকাতে দেরি হয় কেন ?
উত্তর: ক্ষত শুকাতে দেরি হতে পারে সংক্রমণ, অতিরিক্ত আর্দ্রতা, পুষ্টির অভাব, বয়স ও শারীরিক সমস্যা যেমন ডায়াবেটিস থাকার কারণে।
কাটা জায়গায় কি দিলে ব্যথা কমে ?
উত্তর: কাটা জায়গায় অ্যালোভেরা, মধু, চা গাছের তেল বা হিমশীতল কম্প্রেস ব্যথা কমাতে সাহায্য করে এবং ত্বককে আরাম দেয়।
ক্ষত সারতে কত দিন লাগে ?
উত্তর: ক্ষত শুকাতে সাধারণত ৩-৭ দিন লাগে তবে বড় বা গভীর ক্ষত শুকাতে ১০-১৫ দিন বা তার বেশি সময় নিতে পারে। গুরুতর ক্ষত হলে দীর্ঘ সময় লাগতে পারে।
কাটা জায়গায় হলুদ দিলে কি হয় ?
উত্তর: হলুদ প্রাকৃতিক অ্যান্টিসেপ্টিক এবং সংক্রমণ রোধ করে ক্ষত দ্রুত শুকাতে সহায়তা করে। তবে এর অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে ত্বকে দাগ হতে পারে। তাই হলুদ ব্যবহারের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।